Thursday, December 10, 2015

অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে হতে পারে এই ৬টি রোগ

sasthobarta protidin
অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে হতে পারে এই ৬টি রোগ
ঘুম আশীর্বাদ স্বরূপ। এটি আমাদের শরীরে ঠিক রাখার পাশাপাশি আমদের মস্তিষ্কেও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। অথচ বিভিন্ন কারণে এই ঘুমকে অবহেলা করে থাকি। ২০১১ সালে Centers for Disease Control and Prevention এক জরিপে দেখা গিয়েছে যে ২৫% এর বেশি আমেরিকান ঠিকমত ঘুমাতে পারেন না। এর মধ্যে ১০% ইনসোমেনিয়া রোগে আক্রান্ত। একজন সুস্থ মানুষের ৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। এর চেয়ে কম ঘুমের কারণে আপনি আক্রান্ত হতে পারেন অনেক মারাত্নক রোগে।

১। স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা

২০১২ এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, পারিবারিক ইতিহাস বা অন্য কোন কারণ ছাড়া শুধু ঘুমের অভাবের কারণে আপনার স্ট্রোক হতে পারে। ঘুমানোর  সময়ে  আমাদের শরীরের  নানা  অঙ্গ  নিজেদের  সারিয়ে  নেয়। দূষিত টক্সিন শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তাই অপর্যাপ্ত ঘুম স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

২। ডায়াবেটিকস

কম ঘুম শর্করা জাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়। ক্লান্তি দূর করতে অনেক সময়ে তরুণরা কার্বোনেটেড পানীয় বা খাবারের দিকে ঝুঁকে থাকে। যা রক্তেশর্করার  পরিমাণ  বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া ২০১২ সালে এক রিপোর্টে বলা হয় কম ঘুম দেহের ইনসুলিন সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে না।

৩। ওজন বৃদ্ধি

বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে ঘুম আর ওজন বৃদ্ধি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। যারা ৬ ঘণ্টার চেয়ে কম ঘুমিয়ে থাকেন তাদের গড় BMI(Body Mass Index) বেশি থাকে। আবার কম ঘুম জাঙ্কফুড,  ফাস্টফুড খাওয়ার আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে। যা আপনার ওজন দ্রুত বৃদ্ধি করে দেয়।

৪। ক্যান্সারের ঝুঁকি

অপর্যাপ্ত  ঘুম  ব্রেস্ট ক্যান্সারের  প্রবণতা  বাড়িয়ে  তোলে। ২০১০ সালে গবেষণায় দেখা গেছে ১২৪০ মানুষ কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে ৩৩৮ মানুষই ৬ ঘন্টার চেয়ে কম ঘুম  অভ্যস্ত ছিলেন।

৫। স্মৃতিশক্তি লোপ

কম ঘুমে অভ্যস্ত মানুষদের মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করে না। তারা কোন কাজে মন দিতে পারে না। এমনকি দিন দিন তাদের স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে থাকে।

৬। হাড়ের সমস্যা

৬ ঘণ্টার কম ঘুম হাড়ের জোর কমিয়ে দেয়। ফলে হাড় দুর্বল হয়ে পরে এবং ছোটখাটো আঘাতে ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। একইসঙ্গে হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথা শুরু হতে পারে।



এই রোগগুলো ছাড়াও অপর্যাপ্ত ঘুম শরীর অবসাদ, ক্লান্তি করে তোলে। এমনকি আপনার মেজাজ খিটখিট করে তোলে।

Wednesday, December 9, 2015

নির্জীব চুল ঝলমলে করে তুলুন সহজ ৯টি উপায়ে

ranna banna o beauty tips
জীবনে সব কিছু ত্রুটিহীন হয়না। কিন্তু চুল অবশ্যই ত্রুটিহীন হওয়া সম্ভব। সাধারণত চুলের ওভার স্টাইলিং বা প্রখর রাসায়নিক ব্যবহারের জন্যই চুল স্ট্যাটিক বা উস্কোখুস্কো হয়ে যায়। একটি গবেষণা প্রকাশ করে যে, চুল স্ট্যাটিক হয়ে গেলে দেখতে প্রাণহীন, ভোঁতা ও শুষ্ক হয়ে যায়। এই স্ট্যাটিক চুলের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে চূলকে স্বাস্থ্যবান রাখতে হবে এবং সঠিক ভাবে পুষ্টি প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। যখন বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকে তখন অর্থাৎ শীতের সময়ে চুলের এই সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। ভালো শ্যাম্পু ও ভালো কন্ডিশনার ব্যবহার করে চুলের এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও আরো কিছু উপায়ে চুলের এই সমস্যার সমাধান করা যায়, চলুন জেনে নেই সেই উপায় গুলো কী।

১। ভেজা চুল আঁচড়ান

স্ট্যাটিক হেয়ার থেকে রক্ষা পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে ভেজা চুল আঁচড়ানো। চুল ভেজা আছে এমন অবস্থায় মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ান। চুল ভেজা অবস্থায় দুর্বল থাকে তাই মোটা দাঁতের চিরুনি প্রয়োজন।

২। হেয়ার সিরাম ব্যবহার করুন

চুলে ভালো কন্ডিশনার ব্যবহার করুন এবং চুলের আর্দ্রতা ঠিক রাখার জন্য হেয়ার সিরাম লাগান। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করবেন না। তাহলে চুল তেলতেলে দেখাবে। ৩ থেকে ৪ ফোটাই যথেষ্ট।

৩। প্লাস্টিকের চিরুনি বাদ দিন
প্লাস্টিকের চিরুনি ঘর্ষণের সৃষ্টি করে যা স্ট্যাটিক হেয়ারের জন্য দায়ী। তাই প্লাস্টিকের পরিবর্তে মেটাল বা কাঠের চিরুনি ব্যবহার করুন। চুলের জট ছাড়ানোর জন্য অবশ্যই মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করবেন তারপর অন্য চিকন দাঁতের চিরুনি দিয়ে চূলকে সাজান।

৪। হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার কমিয়ে দিন

চুল শুকানোর জন্য খুব বেশি ড্রায়ার ব্যবহার করবেন না। ভেজা চুল পাতলা সুতির তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন। এতে চুলের আর্দ্রতা ঠিক থাকে। যদি ড্রায়ার ব্যবহার করতেই হয় তাহলে চুলের কিছু অংশে ব্যবহার করুন। আয়নিক ড্রায়ার ব্যবহার করতে পারেন। কারণ আয়নিক ড্রায়ার চুলের ইলেকট্রিক চার্জ প্রতিরোধ করে। ইলেকট্রিক চার্জের কারনেই চুল স্ট্যাটিক বা নির্জীব হয়।  

৫। লোশন ব্যবহার করুন

তাৎক্ষণিক ভাবে চুল এর নির্জীবতা দূর করতে হ্যান্ড লোশন ব্যবহার করতে পারেন। সামান্য লোশন হাতে নিয়ে ঘষুন, তারপর আপনার চুলের ভেতর হাত বুলিয়ে নিন। এতে চুলের নির্জীবতা দূর হবে।

৬। হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করুন

আপনার হেয়ার ব্রাশে স্প্রে লাগিয়ে চুল ব্রাশ করুন, এতে চুলের উস্কোখুস্কোভাব দূর হয়।

৭। পানি ব্যবহার করুন

সবচেয়ে সহজ কিন্তু কার্যকরী হচ্ছে পানিতে হাত ভিজিয়ে নিয়ে চুলের মধ্যে হাত বুলিয়ে নিন। এতে তাৎক্ষণিক ভাবে চুল ঠিক হয়ে যায়।

৮। ড্রায়ার শিট ব্যবহার করুন
আপনার চিরুনি ড্রায়ার শিট দিয়ে পেঁচিয়ে রাখুন এবং আপনার চুলেও ড্রায়ার শীট ব্যবহার করুন। এতে চুলের নির্জীবতা দূর হয়।

৯। রাবারের সোল যুক্ত জুতা পরিধান করা বাদ দিন

রাবারের সোল চুলের বৈদ্যুতিক আধান তৈরি করে যা চুলের নির্জীবতা সৃষ্টিকারী। অন্য দিকে চামড়ার জুতা জামা কাপড় ও চুলের বৈদ্যুতিক আধান কমায়। তাই রাবারের জুতা না পরে চামড়ার জুতা পড়ুন।

স্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর কোমল পানীয়ের অদ্ভুত কিছু ব্যবহার

sasthobarta protidin
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সতর্কবার্তা থাকা সত্ত্বেও বেশির ভাগ মানুষই কোকাকোলা, পেপসির মতো সফট ড্রিংকগুলো পছন্দ করে এবং পান করে। সফট ড্রিংকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে আমরা বধিরের মতই আচরণ করি এবং কেন সফট ড্রিংক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তা নিয়ে মাথা ঘামাই না। সফট ড্রিংক আসলে খাওয়ার চেয়ে অন্যান্য কাজে বিশেষ করে পরিষ্কারক হিসেবে অনেক বেশি কার্যকরী। আজ আসুন সফট ড্রিংকের ক্ষতির কারণ এবং অন্য কি কাজে ব্যবহার করা যায় সগুলো জেনে নেই।   

১। পেইন্ট এর দাগ দূর করে

ধাতুর তৈরি ফার্নিচারের পেইন্ট দূর করতে পারে সফট ড্রিংক। আপনি নিজেই এটা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। একটি তোয়ালে সফট ড্রিংক দিয়ে ভিজিয়ে আপনার বাসার ফার্নিচারের উপর ঘষা দিন দেখবেন ফার্নিচারের আঁকার দাগ উঠে গেছে।

২। মরিচা দূর করে

ধাতুর তৈরি জিনিষ এর মরিচা দূর করতে পারে সফট ড্রিংক। সাধারণত কোন জিনিষে মরিচা পরলে তা দূর করা খুব কঠিন। ঠান্ডা সফট ড্রিংক এই কঠিন মরিচাকে খুব সহজেই দূর করতে পারে।   

৩। টয়লেট পরিষ্কার করতে পারে

টয়লেট এর কঠিন দাগ দূর করতে পারে সফট ড্রিংক। আপনার টয়লেটে সফট ড্রিংক ঢেলে ১৫-২০ মিনিট পরে ফ্ল্যাশ করুন। আপনি একটা ঝকঝকে দাগ মুক্ত টয়লেট পাবেন।

৪। পোড়া হাড়ি পাতিলের দাগ তুলতে পারে

কোন হাড়িতে খাবার পুড়ে গেলে সেই দাগ তুলাটা কঠিন হয়। এই পোড়া হাড়ি পাতিলের মধ্যে সফট ড্রিংক দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। তারপর মাজুনি দিয়ে ঘষলেই পোড়া দাগ সম্পূর্ণ দূর হয়ে যাবে।

৫। রক্তের দাগ দূর করতে পারে

কাপড়ে রক্তের দাগ লাগলে কাপড়টি একটি বোলে নিয়ে সফট ড্রিংক দিয়ে ভিজিয়ে রেখে দিন। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন দেখবেন রক্তের দাগ দূর হয়ে গেছে।   

এতোসব কঠিন কাজ সমাধান করতে পারে যে সফট ড্রিংক তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর হতে পারে তা নিশ্চয়ই বুঝতে অসুবিধা হচ্ছেনা কারোরই।

অনেক বেশি সফট ড্রিংক খেলে সাধারণত যে সমস্যা গুলো হতে পারে তা হল-

    ·         সফট ড্রিংকে চিনির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে বলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
    ·         সফট ড্রিংকের এসিড দাঁতের ক্ষয় সৃষ্টি করে।
    ·         হাড়ের ক্ষয় সৃষ্টি করে সফট ড্রিংক
    ·         এছাড়াও ডায়াবেটিস, গেঁটেবাত, ক্যান্সার, ডিমেনসিয়া ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় সফট ড্রিংক।

যদি আপনি ওজন কমাতে চান, ক্রনিক রোগ এড়াতে চান এবং শার্প ব্রেইন নিয়ে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে চান তাহলে সফট ড্রিংক পান করা বাদ দিন। এর বদলে পানি, দুধ বা জুস পান করার অভ্যাস তৈরি করুন।  

রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে যে খাবার গুলো

sasthobarta protidin
রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে যে খাবার গুলো
অনেক রকমের খাদ্য আছে যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী আবার এমন কিছু খাবার আছে যা মোটেই উপকারী নয়। আমাদের পরিচিত এই খাবার গুলোর চমৎকার উপাদান গুলো সম্পর্কে আমরা সঠিক ভাবে জানিনা। আজ আমরা সেইসব গুরুত্বপূর্ণ “হিলিং ফুড” সম্পর্কে জানবো। 

১। লেবু

আমাদের অতিপরিচিত লেবু যা সাধারণত সবার বাসাতেই থাকে। লেবুর স্বাস্থ্য উপকারিতা অপরিসীম। গলার ইনফেকশন দূর করা, বদহজম দূর করা, ওজন হ্রাসের ফলে সৃষ্ট কোষ্ঠ কাঠিন্য ভালো করা, শ্বাসযন্ত্রের রোগ নিরাময় করা, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং লিভার পরিষ্কার করা ইত্যাদি কাজ গুলো করে থাকে লেবু। 

২। নাশপাতি 

নাশপাতি উচ্চ মাত্রার ফাইবার সমৃদ্ধ ফল। যা রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমায়, হালকা জোলাপের ন্যায় কাজ করে কোষ্ঠ পরিষ্কার করে এবং গল ব্লাডার বা পিত্ত থলি পরিষ্কার করে।

৩। কলা

কলা স্ট্রেস বা উদ্বিগ্নতা দূর করে। New Orleans  এর Ochsner’s Elmwood Fitness Center এর স্পোর্টস ডায়েটেটিক্স বা খাদ্যনির্বাচনবিদ্যার সারটিফায়েড স্পেশিয়ালিস্ট, আরডি, Molly Kimball  বলেন, যখনই আপনি চাপ অনুভব করবেন একটি কলা খেয়ে নিন। কলাতে ১৪ গ্রাম চিনি থাকে এবং ১০৫ ক্যালরি সমৃদ্ধ। কলা ব্লাড সুগার লেভেল কিছুটা বাড়ালেও দিনের জন্য প্রয়োজনীয় ৩০% ভিটামিন বি৬ সরবরাহ করে যা সেরোটোনিন এর উৎপাদন বৃদ্ধি করে। ফলে শান্তিপূর্ণভাবে সংকট মোকাবিলা করা সহজ হয়।

৪। দই

দই কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাস দূর কর। এক কাপ বা আধা কাপ লাইভ কালচার ইয়োগারট যা অন্ত্র বান্ধব ব্যাকটেরিয়ায় পরিপূর্ণ থাকে অন্ত্রের মধ্য দিয়ে খাদ্যের চলনে সাহায্য করে। এই উপকারী ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে গ্যাস উৎপন্নকারী মটরশুঁটি ও দুগ্ধ শর্করার পরিপাকে সাহায্য করে।  

৫। আদা

আদা শুধু রান্নার মশলা হিসাবেই না শতবর্ষ আগে থেকেই আদা আরথ্রাইটিস এর চিকিৎসায়, পাকস্থলীর অবসাদ দূর করতে এবং হজমে সাহায্য করতে পারে বলে ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমানে আদা বমি বমি ভাব কমাতে পারে বলে সর্বত্র স্বীকৃত হয়েছে।

৬। বীট

কার্বোহাইড্রেট থেকে এনার্জি পাওয়া যায়। বীট প্রাকৃতিক এনার্জি সাপ্লাই করে। বীটে কার্বোহাইড্রেটের পাশাপাশি ক্যালসিয়াম, আয়রন, এবং ভিটামিন এ ও সি থাকে।

এই রকম আরো কিছু হিলিং ফুড হল- কিশমিশ রক্তচাপ কমায়, তুলসি পেটের সমস্যা ভালো করে, মধু কফ দূর করে, বাঁধাকপি আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে, ডুমুর অর্শ রোগ নিরাময় করে, কমলার রস ক্লান্তি দূর করে, রসূন ইষ্ট ইনফেকশন নিরাময় করে, আলু মাথা ব্যাথা দূর করে।

জেনে নিন পিরিয়ড দেরিতে হবার কারণগুলো

sasthobarta protidin
জেনে নিন পিরিয়ড দেরিতে হবার কারণগুলো
নারীদের জীবনের একটি বড় অংশ হলো পিরিয়ড বা ঋতুচক্র। প্রতি মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ে পিরিয়ড বেশীরভাগ নারীর। অনেক সময়ে দেখা যায়, কোনো কারণে বা কারণ ছাড়াই পিরিয়ড বেশ কিছুদিন লেট হচ্ছে। এ সময়ে অনেকেই ভয় পেয়ে যান। কেউ বা আবার একে স্বাভাবিক বলে উড়িয়ে দেন। পিরিয়ড লেট হবার কারণগুলো আসলে কী? এ ব্যাপারে আমাদেরকে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জানান ডাক্তার লুৎফুন্নাহার নিবিড়।

গর্ভধারণ না হলে বিভিন্ন কারণে লেট হতে পারে পিরিয়ড। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার নিবিড় প্রিয়.কমকে জানান, এর পেছনে একটা বড় ভূমিকা পালন করে হরমোন সংক্রান্ত পরিবর্তন। পিরিয়ডের পুরো প্রক্রিয়াটা নিয়ন্ত্রণ করে কয়েকটি হরমোন, ফলে হরমোনের মাত্রায় পরিবর্তন এলে পিরিয়ড লেট হতে পারে। পিরিয়ড পেছনে কারণ হিসেবে থাকতে পারে জীবনযাত্রায় বড় কোনো পরিবর্তন, যেমন:

    -          পরিবেশগত পরিবর্তন
    -          ওজন হঠাৎ করে কমা বা বেড়ে যাওয়া
    -          ডায়েট
    -          ভারী ব্যায়াম বা শরীরচর্চা, যেমন দৌড়ানো বা নাচের চর্চা
    -          ভ্রমণ করে নতুন কোথাও যাওয়া বা নতুন কোনো জায়গায় বসবাস করতে আসা
    -          মানসিক কোনো বড় পরিবর্তন, কোনো ধরণের মনস্তাত্ত্বিক ধাক্কা

প্রিয়.কমকে ডাক্তার নিবিড় জানান, অনেক সময়ে দেখা যায় বার্থ কন্ট্রোল পিল অথবা অন্য কোনো ইমার্জেন্সি পিল গ্রহণের কারণেও পিরিয়ড লেট হতে পারে।

এর মানে কি পিরিয়ড লেট হবার পেছনে কোনো অসুস্থতা নেই? ডাক্তার নিবিড় জানান, থাকতে পারে। পিরিয়ড লেট হবার পেছনে যেসব রোগের অবদান থাকতে পারে সেগুলো হলো-

-          ওভারিতে প্রভাব ফেলে এমন কোনো যৌনরোগ

-          ওভারিতে সিস্ট, ইউটেরাসে টিউমার থাকলে পিরিয়ড লেট হতে পারে বা খুব বেশি রক্তক্ষরণ হতে পারে

-          এছাড়াও শরীরের ওপরে বড় মাত্রায় চাপ ফেলে এমন অসুস্থতার কারণে পিরিয়ড লেট হতে পারে

-          কোনো রোগের কারণে হরমোন লেভেল অস্বাভাবিক হয়ে পড়লে তার জন্য পিরিয়ড লেট হতে পারে।

কোনো অসুস্থতার কারণে যদি আপনার স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে থাকে এবং এ কারণে পিরিয়ড লেট হয়, তবে রোগ সারিয়ে তলার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া খাওয়া দাওয়া করতে হবে নিয়ম মতো। ধূমপান, ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল এর ব্যাপারে থাকতে হবে সাবধান।

পিরিয়ড লেট হলে আপনার কী চিন্তিত হবার দরকার আছে? পরিবেশগত বা জীবনযাত্রার কোনো পরিবর্তনের কারণে পিরিয়ড লেট হলে সাধারণত চিন্তার কিছু থাকে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার দেখিয়ে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া ভালো। আপনার যদি তলপেটে ব্যাথা হয়ে থাকে, পরপর দুই মাস পিরিয়ড না হওয়া বা বার্থ কন্ট্রোল পিল খাবার পরেও পরপর দুই মাস পিরিয়ড না হয়, এসব ক্ষেত্রে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়াই ভালো। মনে রাখবেন, লজ্জা নয়, সচেতনতা জরুরী।
- See more

Tuesday, December 8, 2015

চায়ের মাঝে দুধ মেশানো ভালো না খারাপ?

sasthobarta protidin
আপনি যদি চা পছন্দ করে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই আনন্দ পাওয়ার জন্য বা ভালো লাগার জন্যই খান, এর স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা চিন্তা করে নিশ্চয়ই খাওয়া হয় না? বিশ্বে দুই বিলিয়ন মানুষ চা পান করে। অনেকেরই চায়ের সাথে দুধ মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস আছে। এতে স্বাদ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, চায়ের সাথে কয়েক ফোঁটা দুধ মিশ্রিত করলে চায়ের গুণাগুণ নষ্ট হয়। ভাবছেন নিশ্চয়ই এটা কীভাবে সম্ভব? আসুন তাহলে জেনে নেই চায়ের সাথে দুধ মেশালে কী হয়?

চায়ে এমন অনেক সক্রিয় উপাদান আছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে। চায়ে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন থাকে। চা ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করে, রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে, কোষের ক্ষতি কমায় এবং কারডিওভাস্কুলার রোগ প্রতিরোধ করে। কিন্তু চায়ের মধ্যে দুধ মিশ্রিত করলে ভাস্কুলার সিস্টেম এর উপর উপকারী প্রভাব দূর হয়ে যায়। 

১৬ জন মহিলার উপর একটি ছোট গবেষণা করা হয়। যেখানে তাঁদের ব্ল্যাক টি, দুধ চা এবং গরম পানি পানের প্রভাব পরীক্ষা করা হয়। বিজ্ঞানীরা মহিলাদের ডান হাতের ব্রাকিয়াল ধমনী চা পানের ২ ঘন্টা পরে পরীক্ষা করে দেখেন যে, ব্ল্যাক টি পান করার ফলে রক্ত নালীর প্রসারণ হয়। এই গবেষণার নেতৃত্ব দানকারী প্রধান লেখক ও আণবিক জীববিজ্ঞানী Mario Lorenz বলেন যে, “আমরা দেখতে পেলাম ... চায়ের সাথে দুধ মিশ্রিত করার ফলে এর জৈবিক প্রভাব পুরোপুরি প্রতিহত হয়”।

চায়ে উপস্থিত ফ্লেভনয়েডকে ক্যাটেচিন বলে যা হার্টের জন্য উপকারী। দুধের প্রোটিন ক্যাসেইন ক্যাটেচিনকে সংহত হতে বাঁধা দেয়। 

২০০২ সালে United States এর হিউম্যান নিউট্রিশন রিসার্চ সেন্টারের একটি গবেষণায় পাওয়া যায় যে, এক কাপ চায়ে ৫০ গ্রাম দুধ মেশানো হলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা ৯০% কমিয়ে দেয়। যখন চায়ের ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যায় তখন শরীরের ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ক্ষমতাও কমে যায়।  

২০০৬ সালের জার্মানির একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, চায়ের মধ্যে দুধ মেশালে ব্ল্যাক টি এর হৃদরোগের হাত থেকে রক্ষা করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। ব্ল্যাক টি ধমনীকে শিথিল ও প্রসস্থ করে এবং রক্তচাপ স্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রাখে।

তারপর ও যদি চায়ের সাথে দুধ মিশিয়ে খেতে চান তাহলে সয়া দুধ খাওয়ার চেষ্টা করুন। সয়া দুধে লেসিথিন থাকে যা ক্যাসেইন থেকে ভিন্ন ধরণের এবং চায়ের  ক্যাটেচিনকে আবদ্ধ করে ফেলেনা।

রোগ দ্রুত সারিয়ে তুলবে এই খাবারগুলো

sasthobarta protidinযেকোনো অসুস্থতা থেকে আরোগ্য লাভ করতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হয়। কারণ তখনও কিছুটা দুর্বলতা, পানিশূন্যতা এবং ক্লান্তিবোধ থাকে বিশেষ করে যখন কোনো শারীরিক বা মানসিক কাজ করতে হয়। তাই দেহের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে কিছু অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান দেহের জন্য প্রয়োজন হয়। এইসব তখনই প্রয়োজন হয় যখন কোনো ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়া জনিত ইনফেকশনের কারনে দেহে প্রতিরোধক ক্ষমতার বেশি কাজ করতে হয়। এছাড়া যখন কোনো রোগের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহন করা হয় তখন একটু বেশিই দেহের যত্ন নেয়া প্রয়োজন হয়। কারণ শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করা হলে তা দেহকে দুর্বল করে দেয়।

এখানে কিছু উত্তম খাবারের উল্লেখ করা হলো যা শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে-
আঙ্গুর

আঙ্গুর শরীরের শক্তি যথেষ্ট পরিমান বৃদ্ধি করতে এবং রক্তের পরিমান বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি দেহের খনিজ পদার্থসহ প্রয়োজনীয় তরল সরবরাহ করে যা অসুস্থতা থেকে দ্রুত সেরে উঠতেও সাহায্য করে।
আমলকী

অসুস্থতার পর শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে আমলকীতে থাকা ভিটামিন সি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান খুবই প্রয়োজনীয়। এটি শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে এবং অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে। জ্যাম বা শুকনো আমলকী স্ন্যাক্স হিসেবে খেতে পারেন।
পেঁপে

যদি কেউ এটা পছন্দ নাও করে তবু জোর করে হলেও খেতে হবে কারন দীর্ঘ অসুস্থতা থেকে আরোগ্য লাভ করার জন্য পেঁপে হচ্ছে একটি উত্তম খাবার। ডেঙ্গু জ্বরের জন্যও এটি বেশ উপকারি। ডেঙ্গু জ্বরে কচি পেঁপে পাতার রস খেলে তা দ্রুত রক্তের প্লেটলেট বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পেঁপেতে থাকে প্রচুর ভিটামিন সি যা দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
কলা

কলা হচ্ছে উচ্চমাত্রার শক্তিদায়ক খাবার। এতে প্রচুর পরিমানে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এটি প্রচুর প্রাকৃতিক চিনি যেমন সুক্রোজ, গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজে ভরপুর থাকে।
আম

ফলের রাজা হিসেবে পরিচিত আম যে পরিমান শক্তি প্রদান করতে পারে অন্য কোন ফলই তা পারেনা। আম ফোলেট, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, জিংক, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি এবং বি কমপ্লেক্স সমৃদ্ধ। তাই অসুস্থতার পর দ্রুত আরোগ্য পেতে নিয়মিত আম বা আমের জুস খেতে পারেন।
আপেল

অসুস্থতার থেকে দ্রুত আরোগ্য পেতে আপেল বেশ ভালো ভূমিকা রাখে। অন্যান্য ফলের চেয়ে আপেল থেকে প্রাপ্ত শক্তি দেহে বেশি সময় থাকে। আপেলে থাকা ভিটামিন সি এবং বি কমপ্লেক্স থেকে প্রাপ্ত শক্তি শারীরিক অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে।
তরমুজ

তরমুজ থাকে ৯০% পানি এবং ভিটামিন সিতে ভরপুর। এটি পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করে শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
বাদাম এবং শুকনো ফল

কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, চিনাবাদাম, কিসমিস, খেজুর ইত্যাদি শারীরিক ভাবে সক্ষম এবং কর্মক্ষম থাকতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের সকালের নাস্তায় এক মুঠ শুকনো ফল এবং বাদাম রাখলে তা অসুস্থতার থেকে আরোগ্য লাভ করার পর শারীরিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য একটি উত্তম উৎস হবে।

লেখিকা

শওকত আরা সাঈদা(লোপা)

জনস্বাস্থ্য পুষ্টিবিদ

এক্স ডায়েটিশিয়ান,পারসোনা হেল্‌থ

খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান(স্নাতকোত্তর)(এমপিএইচ)

মেলাক্কা সিটি, মালয়েশিয়া
অসুস্থ হওয়ার মানেই হলো দেহে সঞ্চিত প্রায় সমস্ত ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ শরীরকে সুস্থ হওয়ার কাজে লেগে যাওয়া। তাই প্রতিরোধক ক্ষমতাকে বেশি কার্যকর ও আরো বেশি শক্তিশালী করতে ঔষধ ছাড়াও কিছু খাবারের প্রয়োজন।