Tuesday, June 7, 2016

ডায়াবেটিক রোগীর জন্য রোজা

sasthobarta protidin
রোজা রাখতে ডায়াবেটিক রোগীদের সাধারণত কোনো নিষেধ নেই। কারো কারো জন্য ঝুঁকি বেশি থাকতে পারে, তারা হলেন-

* অ্যাডভান্সড কিডনি রোগ- যাদের ডিহাইড্রেশন হওয়ার আশংকা থাকে, যা বিপদজনক।

* হার্টের রোগী যারা আট-দশটা ওষুধ নিয়মিত খায়।

* অনেক বেশি সুগার ফলে জটিলতার ভয় থাকে।

* সম্প্রতি জটিলতা নিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে (যেমন কিটোএসিডসিস)।

* গর্ভবতীর রোজা রাখা ঠিক নয়।

* বারবার ইনসুলিন নিলে বা অন্য ওষুধ নিলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার আশংকা থাকলে রোজা রাখা যায় না।

রোজার দিনে খাবার

বাস্তবতা হল রোজার মাসে কর্মব্যস্ততা, অফিস ইত্যাদি রাতে করতে পারলে ভালো হতো, দিনের বেলা পারতপক্ষে কম কায়িক পরিশ্রম করা ভালো। খাওয়ার বিশেষ কোনো নিষেধ নেই। আমরা অন্য সময় যা খাই তাই খেলে সমস্যা হতো না। রোজার সময় বিশেষ খাবার খাই বলেই সমস্যা হয়। ক্যালরি ঠিক রেখে খেতে পারলেই হল। নাশতা যদি ইফতার হয়, ডিনার যদি রাতের খাবার হয়, তারাবির পর যদি লাঞ্চ করি তা হলে সমস্যা নেই। সমস্যা হল কেউ কেউ ইফতারেই রাতের খাবার সেরে নেন; অনেকেই শেষ রাতে কিছু খান না, বরং ইফতারির পর থেকে সেহরি পর্যন্ত এটা-ওটা (স্ন্যাকস) খেয়ে কাটিয়ে দেন। শেষরাতে খেতে হবে রেগুলার খাবার। রোজাদারের জন্য মিষ্টি বাদ দিতে হবে। চর্বি জাতীয় খাবার, ভাজাপোড়া কম খেতে হবে। ভাজাপোড়ায় তেল/চর্বি বেশি। ভূরিভোজ চলবে না। বারবার কিন্তু কম খাওয়া ভালো।

সবার জন্য ফল খাওয়া ভালো। ডায়াবেটিক রোগীর প্রতিদিন একটা মিষ্টি ফল খাওয়া উচিত। টক ফল খাওয়া খুব ভালো। ফলে ফ্রুক্টোজ থাকে। ফ্রুক্টোজ স্বাদে চিনির মতো মিষ্টি কিন্তু এতে গ্লুকোজ নেই। যে ফলে যত বেশি ফ্রুক্টোজ ডায়াবেটিক রোগীর জন্য সেটা তত ভালো। রোজার দিনে বিশেষ করে আমাদের খেজুর খাওয়ার অভ্যাস। খেজুর নিষেধ নয়। পরিমাণ (প্রতিদিন ৪/৫টা) ঠিক রেখে খেলে বরং উপকার।

রোজার দিনে ডাক্তারের বিশেষ দায়িত্ব

* রোগীর রোজা রাখার সামর্থ্য আছে কিনা যাচাই করা

* রোজার সম্ভাব্য জটিলতা ও তার সমাধানের ধারণা দেয়া

* রোজা রেখে ব্লাড গ্লুকোজ পরীক্ষার করা যায় কিনা তার ধারণা দেয়া

* ওষুধ ও ব্যায়াম সম্পর্কে ধারণা দেয়া

* সঠিক সহজ ডোজের ট্যাবলেট বাতলে দেয়া

রোজাদারের কী কী সমস্যা হতে পারে

ডিহাইড্রেশন : পানি কম খাওয়া, অপরিমিত কায়িক শ্রম, ওষুধ ইত্যাদি কারণে পানিস্বল্পতা হওয়ার শংকা থাকলেও বাস্তবে কম হয়। রাতেরবেলা পানি পুষিয়ে খেতে হবে। ফজরের আজানের আগ পর্যন্ত খাওয়া চালাতে হবে। দিনের প্রথম ভাগে কাজ বেশি করা যেতে পারে। আসলে রোজার শুরুতে সমস্যা হলে ও পরের দিকে অ্যাডজাস্টেড হয়ে যায়। তবে আবহাওয়া বুঝে কাজ করতে হবে। সতর্কতার বিকল্প নেই। শসা, ডাব ইত্যাদি প্রকৃতি প্রদত্ত পানি মেন্যুতে রাখতে হবে।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া (হাইপো) : সুগার অনেক কমে গেলে কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। স্বাভাবিক মানুষের গ্লুকোজ ২.৫ মিমোল বা তার কম হলে হয়। যারা ডায়াবেটিসের ওষুধ খান তাদের ৩.৫ হলেই হয়। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তের পরিমাণ দেখার চেয়ে উপসর্গ দিয়েই বিবেচনা করতে হয়।

ভীতি থাকলেও পরিসংখ্যান আমাদের ধারণাকে সমর্থন করে না। রোজা রাখলেই হাইপো হবে এ ধারণা ঠিক না। ডায়াবেটিসের ওষুধ না খেলে হাইপো হয় না। সব ওষুধে হাইপো হওয়ার আশংকা সমান নয়। ১২-১৪ ঘণ্টা না খেয়ে থাকলেও কারো হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয় না। যারা সালফোনিলুরিয়া ট্যাবলেট খান ও ইনসুলিন নেন তাদের হাইপো হওয়ার আশংকা অনেক বেশি। তাই ওষুধ ও ডোজ অ্যাডজাস্টমেন্ট করতে হয়। সন্দেহ হলে আঙ্গুল থেকে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। নিশ্চিত হলে মিষ্টি খেয়ে নিতে হবে।

রাতের শেষ ওয়াক্তে সেহেরি খেতে হবে।

* ইফতারিতে ভূরিভোজ আর সেহরিতে লাইট খাবার বা না খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিতে হবে।

* দিনের বেলায় যত সম্ভব কায়িক শ্রম কমাতে হবে। তারাবিতে কায়িক শ্রম ধরেই দিনের ব্যায়ামের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।

কিটোএসিডোসিস/ হাইপারঅসমলার স্টেট/ হাইপারগ্লাইসেমিয়া : এখানে ডিহাইড্রশন একটা বড় ফ্যাক্টর বিশেষ করে বয়স্ক লোকদের। হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ভয়ে ওষুধ অনেকেই বাদ দেন বা অযৌক্তিক কমিয়ে দেন। পরিশ্রম কম করে বিধায় সুগার বেশি হয়ে যায়। গ্লুকোজসমৃদ্ধ খাবার এবং পার্টি ভোজন কম করা ভালো। ফাইন সুগার কম খেতে হবে। কমপ্লেক্স শর্করা (রুটি, ভাত) ও শাক-শবজি, ডাল, ফল এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে।

খাদ্যনালীর সমস্যা : ইফতারি ও সেহরিতে অনভ্যস্ত খাবার এবং রাস্তাঘাটের খাবার এ সমস্যার কারণ। সারাদিন খালি থাকা খাদ্যনালী সবকিছু সহ্য নাও করতে পারে! কিছু কিছু ওষুধও বাদ দেয়া লাগতে পারে। বমি, পাতলা পায়খানা হলে সোডিয়াম পটাশিয়াম কমে যাওয়ার ও প্রস্রাব কমে যাওয়ার রিস্ক থাকে।

রোজার দিনে রক্ত পরীক্ষা : রোজার তিন মাস আগে থেকেই গ্লুকোজ কন্ট্রোলে থাকলে এই মাসে কিছু হওয়ার কথা নয় অযৌক্তিক কিছু না করলে। বাংলাদেশ, মিসর, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের আলেমদের মতানুযায়ী আঙ্গুল থেকে রক্ত পরীক্ষা করলে রোজা ভাঙে না। যার গ্লুকোজ কন্ট্রোলে নেই সেহরির দু’ঘণ্টা পরে, ইফতারির আগে, ইফতারির দু’ঘণ্টা পরে এক বা একাধিকবার রক্ত পরীক্ষা করতে হয়। নাশতার আগে ৬ মি.মো ও খাওয়ার পরে ৮-১০ মি.মো টারগেট করতে হবে।

ওষুধ নিয়মিতকরণ : সহজতর হল সকালের ওষুধটা সন্ধ্যায় অর্থাৎ ইফতারের পানি পান করে খেয়ে নিলে হয়। বাকিটা রাতে ভাগ করে খেয়ে নিলেই হল।

ইনসুলিন : যারা দিনে দুই ডোজ নেন তারা সকালেরটা সন্ধ্যায় নিবেন। মনে রাখা সহজ হল ইফতার অর্থ নাশতা, আমরা রোজার দিনে নাশতা করি সন্ধ্যায়, তাই নাশতার ডোজটা নাশতায় নিলেই হল। দ্বিতীয় ডোজটা শেষরাতে নিলেই হল। তবে সতর্কতা হিসেবে রোজার প্রথম দিকে দ্বিতীয় ডোজটা অর্ধেক নেয়া যেতে পারে। ৪-৫ দিন পরে সেহেরির পর (সকাল ৮-৯টা) সুগার পরীক্ষা করে দেখতে হবে। যদি বেশি থাকে ইনসুলিন বাড়াতে হবে। বাস্তবতা হল যে সব রোগীর ইনসুলিন ছাড়া কন্ট্রোল হয় না তাদের ডোজ কমানো দরকার পরে না।

ট্যাবলেট : সালফোনিলুরিয়া ২৪ ঘণ্টা কাজ করে তাই পারতপক্ষে সন্ধ্যায় এক ডোজ নেয়া ভালো। সালফোনিলুরিয়া শরীরে গ্লুকোজ কম থাকলে আরও কমায় অর্থাৎ খাই আর না খাই গ্লুকোজ কমাবেই তাই হাইপো হওয়ার আশংকা বেশি। সাস্টেইনড রিলিজ (এসআর) মডিফাইড রিলিজ (এমআর) ট্যাবলেটগুলো পছন্দনীয়।

মেটফরমিন : গ্লুকোজ সেন্সিটাইজার। ইনসুলিন বেশি না থাকলে কমায় না তাই হাইপো হওয়ার কথা না। দুইবেলা তিনবেলা এবং ফুলডোজে নেয়া যেতে পারে। মনে রাখতে হবে মেটফরমিন ডায়রিয়া বমির কারণ হতে পারে। সে জন্য সম্ভব হলে রোজার দিনে সর্বনিু ডোজ দিতে হবে।

ইনক্রেটিন (ভিলডাগ্লিপট্ন, সিটাগ্লিপটিন, সেক্সাগ্লিপটিন), লিরাগ্লুটাইড : খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যে ইনসুলিন নিঃসরণ হয় এরা সেই ইনসুলিন ভাঙতে দেয় না। তাই রোজার দিনে সন্ধ্যাবেলার ডোজ নিরাপদ। তবে বমি বা ডায়রিয়ার ঝুঁকি থাকে। দরকারে ডোজ কমাতে হবে।

লিরাগ্লুটাইড সহ্য হয়ে গেলে সন্ধ্যাবেলায় একমাত্র ওষুধ এক ডোজ নিলেও হতে পারে।

মেটফরমিন ও ইনক্রেটিন গ্রুপ সহ্য না হওয়ার আশংকা থাকলে মডিফাইড রিলিজ সালফুনিলুরিয়া দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। তবে ইনসুলিনের পরিবর্তে এক মাস বড়ি দিয়ে চলতে পারে ধারণা ঠিক নয়।

এসজিএলটি ২ ইনহিবিটর : নতুন ওষুধ অভিজ্ঞতাও কম। এরা এমনিতই ডিহাইড্রেশন করে, কিটোএসিডসিস বাড়ায় বিধায় ব্যবহার না করা ভালো।

রোজাদারের ব্যায়াম : ব্যায়াম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যাবশ্যক। রোজার সময় তারাবির নামাজের ঘণ্টাখানেকের শ্রম ব্যায়াম হিসেবে নিয়েই ব্যায়ামের প্লান করতে হবে। ইফতারের এক ঘণ্টা পরে কায়িক শ্রম করা ভালো। দিনের শেষদিকে কায়িক শ্রম বাদ দিতে পারলে উত্তম। তারাবিতে যাওয়া-আসার রাস্তাটা ঘুরে গিয়ে লম্বাকরা যেতে পারে।

যারা ট্রেড মিলে অভ্যস্ত সুবিধামতো রাতেরবেলা কোনো সময় ১০-১৫ মিনিট ট্রেড মিল করে নিতে পারেন। তবে প্রিতিদিন একই সময় করতে পারলে ভালো।

পানি : গরমের দিনে রোজা, দিন বড়। পানির ব্যাপারে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। আল্লার নিয়ামত পানিসমৃদ্ধ ফল শসা, টমাটো, তরমুজ, ডাব বেশি খেতে হবে। রাতেরবেলা, সন্ধ্যা শুরু থেকে সেহেরির শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত পানি নেয়া চলবে। দিন বড় বলে ভয় পাওয়ার দরকার নেই। দুনিয়ার অনেক দেশই আছে যেখানে দিন শুরু হয় ভোর ৫টায়, শেষ হয় রাত ১০টায়। আসলে আল্লাহর দেয়া শরীরের অ্যাডজাস্টমেন্ট ক্ষমতা অনেক বেশি।

রোজার উপকারিতা : ব্যক্তি-সংযম, সহমর্মিতার অভ্যাস বাড়ায়। চা কফি ধূমপান ইত্যাদি অনাবশ্যকীয় খাবার ও অভ্যাস/বদাভ্যাস ত্যাগ করা শেখায়।

স্বাস্থ্য : সারা দিনের অভূক্ততায় দূষিত পদার্থ ও অপ্রয়োজনীয় জিনিস বার্ণ করে।

বিশেষভাবে জানবেন

যেসব ডায়াবেটিক রোগী সব ঝুঁকির কথা জেনেও রোজা রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, তাদের রোজা শুরুর আগে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতে হবে। এর মধ্যে আছে খালি পেটে ও খাবার ২ ঘণ্টা পর (মোট ৬ বার) রক্তের গ্লুকোজ, খালি পেটে রক্তের লিপিড, লিভার কিডনি ও হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতার পরীক্ষা এবং এইচবিএ১সি ইত্যাদি পরীক্ষা করে নিতে হবে।

* সবাইকে তার নিজের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। চিকিৎসকরা এক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করবেন।

* ডায়াবেটিক রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন। আগে থেকে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রস্তুতি নিতে হবে।

* রোজার সময় নিজে ডায়াবেটিসের ওষুধ সমন্বয় করবেন না, এতে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে।

* সেহরির খাবার সেহরির শেষ সময়ের কিছু আগে খাওয়া উচিত। ইফতারের সময় বেশি চিনিযুক্ত খাবার খাবেন না।

* রোজার সময় দিনের বেলা অতিরিক্ত ব্যায়াম করা উচিত নয়। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।

* রোজার সময় রাতের বেলা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি (সম্ভব হলে ডাবের পানি), কম মিষ্টি রসাল ফল এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।

লেখক : মেডিসিন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, বারডেম, ঢাকা

Wednesday, April 13, 2016

উৎসবের আগে ঘরেই ফেসিয়াল

ranna banna o beauty tips
উৎসবের আগে ঘরেই ফেসিয়াল
মুখের সৌন্দর্য বজায় রাখতে দরকার মসৃণ ত্বক। তাই সব সময় প্রয়োজন পড়ে ত্বকের পরিচর্যা। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় গরমে একটু বেশিই নিতে হয়। এসময় অতিরিক্ত ঘামের কারণে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা যায় না। অথচ ত্বকে পর্যাপ্ত আদ্রতাও থাকে না। তাছাড়া আসছে পহেলা বৈশাখের সুন্দর সাজের জন্যও নিজের ত্বককে প্রস্তুত করা জরুরি। উজ্জ্বল ত্বকের তকমাতে এবার নজর কাড়বে সবার।

ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে ফেসিয়ালের তুলনা নেই। পার্লারে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে না চাইলে যেকোনো উৎসবের আগে নিজেই করে নিতে পারেন সুন্দরভাবে। সেজন্য দরকার ফেসিয়ালের উপযুক্ত ধাপ সম্পর্কে জেনে নেয়া। আসুন দেখে নেয়া যাক, বাসায় বসে কীভাবে পার্লারের মতো কার্যকরী ফেসিয়াল করা যায়।

ক্লিঞ্জিং

প্রথমে মুখের ত্বকে গরম ভাপ নিয়ে নিন। এটি আপনার মুখের লোমকুপগুলো খুলে দিতে সাহায্য করবে। ভাপ নেয়া হয়ে গেলে ক্লিঞ্জার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন ভালো করে। দুধে তুলা ভিজিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে পারেন।

ম্যাসাজ

ফেসিয়াল ক্রিম দিয়ে ১০ মিনিট ত্বকে হালকা হাতে ম্যাসাজ করে নিন। চোয়ালের নিচ থেকে উপরের দিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করতে হবে। এতে প্রতিটি লোমকুপের ভেতর থেকে ময়লা বের করতে সুবিধা হয়।

স্ক্র্যাবিং

ম্যাসাজ ক্রিম ধুলে এবার স্ক্র্যাব দিয়ে মুখ আলতো ভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ঘষতে থাকুন। তারপর উষ্ণ তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে ফেলুন। উজ্জ্বল ত্বকের জন্য চালের গুঁড়া, সুজি অথবা চিনি হতে পারে সবচেয়ে ভালো স্ক্র্যাব।

টোনিং

সমপরিমাণ ভিনেগার ও গোলাপ জল মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন টোনার। যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে খুবই উপযোগী। তুলা দিয়ে টোনার মুখে লাগান কিন্তু ভুলেও ঘষবেন না। চোখের চারপাশ বাদ দিয়ে টোনার লাগাতে হবে।

এবার ফেসিয়ালের জন্য যে কোনো একটি মাস্ক প্রস্তুত করুন-

শশা মাস্ক

একটা শসার রস বের করে এক চামচ চিনি ভালো করে মিশিয়ে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিন। ত্বকে মেখে দশ মিনিট রেখে ধুতে হবে। শসার রস ত্বককে হাইড্রেট করে, ফলে ত্বক অনেক মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়।

মসুর মাস্ক

দু’চামচ মসুর ডাল সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে মসুর ডাল বেটে তার মধ্যে অল্প দুধ ও আমণ্ড তেল মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এই প্যাকটা মুখে মেখে দশ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার পানি দিয়ে ঘষে ঘষে ধুয়ে নিন।

দই মাস্ক

শসার রস, এক কাপ ওটমিল ও এক টেবিল চামচ দই একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার এই মিশ্রণটা পুরো মুখে মেখে তিরিশ মিনিট রেখে হালকা গরম পানিতে ধুয়ে নিন।

ডিম মাস্ক

একটা ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে এই মিশ্রণটা ২০ মিনিট মুখে রেখে ধুয়ে ফেলুন।

টমেটো মাস্ক

একটি টমেটো ভালো করে চটকে নিন। সঙ্গে আধা চা চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাক নিয়মিত ব্যবহারে আমাদের ত্বকের দাগগুলো সব মিলিয়ে যাবে।

মাস্ক ব্যবহারের পর ফুটন্ত গরম পানিতে ১ চামচ গ্রিন টি কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। ১টি বাটিতে ২ চামচ মুলতানি মাটি, ২ থেকে ৩ চামচ গ্রিন টি ভেজানো পানি এবং ঘৃতকুমারীর রস মেশান। তারপর প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এবার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আবিষ্কার করুন নতুন আপনাকে।

ওজন কমাতে সাহায্য করবে এই ৬টি লাল ফল

sasthobarta protidin
ওজন কমাতে সাহায্য করবে এই ৬টি লাল ফল
ওজন নিয়ে ছেলে মেয়ে কারোর চিন্তার শেষ নেই। কী খেলে কীভাবে ওজন কমবে এই নিয়ে কত শত পরিকল্পনা। বিশেজ্ঞদের মতে সঠিক সময়ে সঠিক খাবার পারে আপনার ওজন দ্রুত হ্রাস করতে। ওজন কমানোর জন্য অনেকেই শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ার পরিবর্তে ফল খেয়ে থাকেন। কিছু ফল আছে যা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে। এই লাল ফলগুলো আপনার ডায়েট লিস্টে যোগ করুন আর দ্রুত কমিয়ে ফেলুন আপনার ওজন।

 ১। ডালিম 
ওজন কমাতে বেশ কার্যকরী একটি ফল হল ডালিম। ডালিমের অ্যান্টি অক্সিডন্ট শরীরে টক্সিন উপাদান দূর করে খাওয়ার রুচি কমিয়ে দিয়ে থাকে। এর সাথে ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা দূর করে থাকে। 

২। লাল আপেল 
লাল এবং সবুজে আপেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। তবে লাল আপেলে এর পরিমাণ বেশি থাকে। এছাড়া লাল আপেলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। জাঙ্ক ফুড খাওয়ার আগ্রহ কমিয়ে দেয়। 

৩। আলুবোখারা 
ওজন কমাতে আলুবোখারা বেশ কার্যকরী একটি ফল। ভিটামিন, মিনারেল সমৃদ্ধ এই ফলটি আপনাকে কাজের শক্তি দিয়ে থাকে। সকালের নাস্তায় কিছু পরিমাণে আলুবোখারা রাখুন এটি সারাদিনের কাজের শক্তি দিবে আপনাকে। 

৪। চেরি 
আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে ছোট এই লাল ফলটি। চেরি সাধারণত খালি পেটে খাওয়া উচিত। এটি রক্তে অ্যাসিডিটির মাত্রা কমিয়ে দেয়। যা বাত, গিঁট এর ব্যথা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। 

৫। স্ট্রবেরি 
প্রতিদিন এক মুঠো স্ট্রবেরি ওজন কমানোর জন যথেষ্ট। এর ভিটামিন সি, অন্যান্য পুষ্টি উপাদান শরীর কার্যক্ষম রাখে। প্রতিদিন সম্ভব না হলে সপ্তাহে দুই দিন স্ট্রবেরি খাদ্য তালিকায় রাখুন। 

৬। জাম্বুরা 
লো ক্যালরি ফ্রুটের মধ্যে জাম্বুরা অন্যতম। জাম্বুরায় মাত্র ৩৭ ক্যালরি রয়েছে! গবেষণায় দেখা গেছে খাবার খাওয়ার আগে অর্ধেকটা জাম্বুরা খেলে এটি মেটবলিজম বাড়িয়ে ওজন হ্রাস করে থাকে। 

Monday, April 11, 2016

পুষ্টিকর এই ৮টি খাবার ভুল সময়ে খাচ্ছেন না তো?

sasthobarta protidin
পুষ্টিকর এই ৮টি খাবার ভুল সময়ে খাচ্ছেন না তো?
সুস্থ জীবনযাপনের জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া অপরিহার্য। দেহের পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য এই খাবারগুলো আমরা খেয়ে থাকি। আপনি জানেন কি, এই পুষ্টিকর খাবারগুলো খাওয়ার সঠিক সময় রয়েছে? ভুল সময়ে খাবারগুলো খাওয়ার কারণে হজমে সমস্যা দেখা দেওয়া থেকে শুরু করে অন্যান্য শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক পরিচিত এই খাবারগুলো খাওয়ার সঠিক সময়টি। 

১। দুধ 
পুষ্টিকর সুষম খাবার বলতে আমরা মূলত দুধকে বুঝি। বিশেষজ্ঞদের মতে এই দুধ খাওয়ার সঠিক সময় হল রাত। দুধ হজম হতে সময় বেশি লেগে থাকে, যার কারণে দিনের বেলা এটি খাওয়া হলে আপনি অলসবোধ করতে পারেন। রাতে দুধ পান করুন, এতে শরীর রিল্যাক্স হবে এবং কোষগুলো দুধের পুষ্টি ভালভাবে শুষে নিতে পারবে। 

২। গ্রিন টি 
ওজন হ্রাস করতে কিংবা স্বাস্থ্য রক্ষার্থে অনেকেই সবুজ চা বা গ্রিন টি পান করে থাকেন। দিনের যেকোন সময় এটি পান করা স্বাস্থ্যকর নয়। সকালে এটি পান করা থেকে বিরত থাকুন, এতে থাকা ক্যাফিন ড্রিহাইড্রেশন এবং অ্যাসিডিটি সৃষ্টি করতে পারে। তাই বিকেল অথবা সন্ধ্যায় এটি পান করুন। 

৩। ভাত 
পুষ্টিবিদ এবং ডায়েটিশিয়ানের মতে ভাত এবং ব্রেড জাতীয় খাবার রাতে না খাওয়াই ভাল। এটি পেট ভরিয়ে রেখে হজমে সমস্যা করে থাকে। রাতে ভাত ওজন বৃদ্ধি করে, হজমে দীর্ঘ সময় নিয়ে থাকে। 

৪। টকদই 
আয়ুর্বেদ অনুসারে রাতে টকদই খাওয়া হলে, এটি শরীরে তাপ বৃদ্ধি করে দেয়। যা হজমের সমস্যা, বুক জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে থাকে। তারা আরও মনে করেন দুপুরের গরমে দই খাওয়া একই সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে। 

৫। কফি 
অনেক বিশেষজ্ঞরা রাতে কফি পান করতে নিষেধ করে থাকেন। এটি ঘুমে সমস্যা সৃষ্টি করে আপনাকে রাতে জাগিয়ে রাখে। সকাল অথবা দুপুরে কফি পান করতে পারেন। এটি আপনার কর্মোদ্যম বৃদ্ধি করে আপনার ঘুম তাড়াতে সাহায্য করে থাকে। 

৬। কমলার রস 
সকালের নাস্তায় অনেকেই কমলার রস পান করে থাকেন। এটি পান করার পারফেক্ট সময় হল সকালবেলা। এর ভিটামিন ডি এবং ফলিক অ্যাসিড সারাদিনের কাজের শক্তি দিয়ে মেটাবলিক বৃদ্ধি করে থাকে। 

৭। চিনি 
চিনি এবং চিনি জাতীয় খাবার সবচেয়ে ভাল সময় হল সকালবেলা। এরা শক্তি বৃদ্ধি করে সারাদিনে কাজে উদ্যম দিয়ে থাকে। রাতে চিনি জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভাল।

 ৮। কলা 
সকাল অথবা বিকেলে কলা খাওয়ার উপযুক্ত সময়। এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড যা বুক জ্বালাপোড়া দূর করে দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে। রাতে কলা খাওয়া অনেকেরই ঠান্ডার সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে। 

যেসব কারণে অকালেই পেকে যাচ্ছে আপনার চুল

sasthobarta protidin
যেসব কারণে অকালেই পেকে যাচ্ছে আপনার চুল
বয়স বিশের কোঠা পেরিয়ে সবে ত্রিশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, চেহারায় এখনো উজ্জ্বল তারুণ্যের দ্যুতি। কিন্তু একী! ঘন কালো চুলের ফাঁকে ফাঁকে দেখা যাচ্ছে ধুসরের ছোঁয়া। এতো কম সময়ে কী চুল ধুসর হবার কথা? অনেকের আবার মধ্যবয়সে স্বাস্থ্য তরতাজা থাকার পরেও চুল পাকতে শুরু করে, বলাই বাহুল্য চেহারায় আসে বয়সের ছাপ। কী কারণে আমাদের কালো চুল এভাবে হারিয়ে যায়? চলুন দেখে নেই অকালে চুল পেকে যাবার কারণগুলো-
১) পারিবারিক ইতিহাস

আপনার বাবা অথবা মায়ের যদি কম বয়সে চুল পেকে গিয়ে থাকে, তবে আপনার ক্ষেত্রেও তা হবার সম্ভাবনা থাকে। এই ব্যাপারটা আসলে আপনার জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের মাঝেই থাকে। মাথায় টাক পড়ার ব্যাপারটা যেমন পারিবারিকভাবে আসতে পারে, তেমনি চুল কম বয়সে পাকার ব্যাপারটাও আসতে পারে পিতামাতা উভয়ের থেকেই।

২) আপনার একটা অটোইমিউন জটিলতা আছে

অ্যালোপেশিয়া অ্যারিয়াটা নামের একটি অটোইমিউন ডিজিজ আছে যা ত্বক এবং চুলকে প্রভাবিত করে অনেক বেশি। এই জটিলতায় আক্রান্ত মানুষের তালুতে ছোট গোল গোল টাক পড়তে পারে। এছাড়া তাদের পুরো মাথা এমনকি পুরো শরীরেই চুল পরে যেতে পারে। তাদের ইমিউন সিস্টেমই তাদের চুলের ফলিকলকে আক্রমণ করে ফলে চুল পড়ে যায়। এরপর সেই চুল আবার গজালে তা সাদা হয়ে গজায়। আপনার শরীরে বা মাথায় যদি এমন টাক দেখা দেয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।

৩) আপনি দূষিত পরিবেশে থাকেন

টক্সিন এবং দূষক পদার্থ আপনার চুল পাকিয়ে ফেলতে পারে অকালে। এগুলো মেলানিনের উৎপাদনকে প্রভাবিত করে এবং চুল পাকার হাড় বাড়ায়। দূষণের কারণে আপনার স্ট্রেস বাড়লে মূলত সেটাই এই চুল পাকার ব্যাপারটাকে প্রভাবিত করে।

৪) আপনি প্রচুর স্ট্রেসের মাঝে আছেন

এটা আমরা অনেকেই বিশ্বাস করি যে স্ট্রেস, দুশ্চিন্তা মানুষের চুল পাকিয়ে দেয়। অনেক সময়েই মায়েরা বলেন বাচ্চার জন্য চিন্তায় তার চুল পেকে যাচ্ছে। এ ব্যপারে অনেক মতভেদ আছে বটে। কিন্তু আপনার জেনেটিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী যে বয়সে চুল পাকার কথা, স্ট্রেসের কারণে সেই সময়টা এগিয়ে আসতে পারে। এ কারণে এই স্ট্রেস ম্যানেজ করা দরকার আপনার।

৫) সিগারেটের ধোঁয়া

আপনি নিজেই ধূমপান করুন অথবা বাড়ির অন্য কেউ করুক, এর ধোঁয়া আপনার চুলের রঙে আনতে পারে পরিবর্তন। ধূমপায়ীদের চুল অকালে পেকে যাবার সম্ভাবনা আড়াই গুণ বেশি হয় অধূমপায়ীদের তুলনায়।

৬) আপনার হরমোনে পরিবর্তন আসছে

কয়েক বছর আগের নিজের একটা ছবি দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন আপনার চুলে সময়ের সাথে পরিবর্তন আসছে। চুলের ধরণ, ঘনত্ব এবং রঙে আসে পরিবর্তন। মূলত সময়ের সাথে হরমোনে পরিবর্তন আসে বলেই এসব পরিবর্তন আসে। চুল পাকার পেছনেও দায়ী এই হরমোন।

এছাড়াও যেসব কারণে চুল অকালে পেকে যেতে পারে সেগুলো হলো-
- প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব
- থাইরয়েডের সমস্যা
- অ্যানিমিয়া

আপনার শরীর হয়তো বেশ অনেকটা বয়স পর্যন্ত শক্তসমর্থ আছে, নিজেকে মোটেই অসুস্থ বা বৃদ্ধ মনে করছেন না আপনি। কিন্তু এরপরেও আপনার চুলে পাক ধরতেই পারে বয়সের কারণে। ৩০ বছর বয়সের পর প্রতি দশকে আপনার চুল পাকার সম্ভাবনা ১০ থেকে ২০ শতাংশ করে বাড়ে। এ কারণে কারও কারও চুল অনেকদিন পর্যন্ত কালো থাকলেও একটা সময়ে সবারই চুল ধূসর হয় আসবে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম।

Wednesday, April 6, 2016

ফলের খোসায় রয়েছে নানা স্বাস্থ্যগুণ

sasthobarta protidin
ফলের খোসায় রয়েছে নানা স্বাস্থ্যগুণ
ফল এমন একটি খাবার যা ভিটামিন, পুষ্টি এবং মিনারেলের উৎস। শরীরের প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান ফল থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু আপনি জানেন কি, ফলের খোসাও রয়েছে নানা স্বাস্থ্যগুণ! ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে, ত্বকের কালো দাগ দূর করতে কমলার খোসা, লেবুর খোসা দিয়ে প্যাক তৈরি প্যাক বেশ কার্যকর। ঠিক তেমনি ওজন হ্রাস করতে কমলার খোসা, অভ্যন্তরীণ ইনফেকশন দূর করতে আপেলের খোসা বেশ কার্যকর।

১। আপেলের খোসা 
আপেলের খোসায় ফ্ল্যাভোনয়েড নামক উপাদান রয়েছে যা ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। এছাড়া আপেলের খোসায় ইউসলিক অ্যাসিড রয়েছে যা স্থূলতা হ্রাস করে এবং ক্যালরি পুড়িয়ে থাকে।

২। কমলার খোসা 
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে কমলার খোসা প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসেবে কাজ করে। শুধু তাই নয় এটি মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায়, শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা এবং বুক জ্বালাপোড়া রোধ করে থাকে। হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দিয়ে থাকে কমলার খোসা।

৩। লেবুর খোসা 
লেবু ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করে থাকে। এর খোসা মুখের দুর্গন্ধ, মুখের ঘা, মাড়ির ইনফেকশন এবং হাড় মজবুত করে থাকে। এতে স্লাভিস্টোরল কিউ৪০, লিমোনিয়া এবং ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান রয়েছে যা শরীরের টক্সিন এবং বিষাক্ত পর্দাথ বের করে দিয়ে থাকে।

৪। তরমুজের খোসা
পুষ্টি সমৃদ্ধ তরমুজের সাদা অংশ স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। এটি ওজন হ্রাস করে থাকে। এছাড়া এটি ত্বক পরিষ্কার করে, স্কিন র‍্যাশ দূর করে থাকে। এমনকি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করে থাকে তরমুজের খোসা।

৫। শসার খোসা 
বেশির ভাগ সময় শসার খোসা কেটে ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু শসার খোসায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার, এবং নানা পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এছাড়া শসার খোসায় বিটা ক্যারটিন, ভিটামিন কে, ভিটামিন এ রয়েছে।

৬। ডালিমের খোসা
 ডালিমের খোসা ত্বকের ব্রণ, র‍্যাশ দূর করে চুল পড়া প্রতিরোধ করে থাকে, এমনকি খুশকি দূর করতেঅ ডালিমের খোসা বেশ কার্যকর। মুখ, গলায় ঘা, হৃদরোগ, হাড় মজবুত করে থাকে। 

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করুন সহজ উপায়ে

sasthobarta protidin
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করুন সহজ উপায়ে
আমরা যা খাই তার পুষ্টি উপাদান ও পানি পরিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরে শোষিত হয়। অপ্রয়োজনীয় অংশগুলো বর্জ্য হিসেবে মলে পরিণত হয়। অন্ত্রের পেশীর সংকোচনের মাধ্যমে মলকে ঠেলে কোলন বা বৃহদান্ত্রে পাঠায়। সেখান থেকে রেক্টামের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। যখন কোলনের মাংশ পেশী নিষ্ক্রিয়  হয়ে যায় তখন কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। এর ফলে ইরেগুলার বাউয়েল মুভমেন্ট হয় এবং স্টুল শক্ত ও শুষ্ক হয় ফলে মলত্যাগে করা কঠিন হয়ে পরে। বেশিরভাগ মানুষেরই অনিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। আবার কেউ কেউ সারা জীবনই ভোগেন। বেশিরভাগ  ক্ষেত্রে ভ্রমণের সময় এটি হয়ে থাকে এবং ছেলেদের চেয়ে মেয়েরাই বেশি ভোগে থাকে।

কন্সটিপেশন দুই ধরণের হয় যথা – অর্গানিক ও ফাংশনাল। অর্গানিক কন্সটিপেশন হয় শারীরিক পরিবর্তনের কারণে, যেমন- কোলনের মধ্যে কোন বাঁধা বা বিকৃতি  হলে। এই ধরণের কন্সটিপেশনের ক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়। ফাংশনাল কন্সটিপেশন হয় – সঠিক প্রকারের খাদ্যগ্রহণ না করলে, যথেষ্ট পরিমাণে তরল খাদ্য না পান করলে, নিয়মিত স্ট্রেসের মধ্যে থাকলে, সঠিক জীবনধারা মেনে না চললে।

উচ্চমাত্রার প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার ফলেই ফাংশনাল কন্সটিপেশন হয়। এই জাতীয় খাবারে পুষ্টি উপাদান ও ফাইবারের পরিমাণ খুব কম থাকে এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অ্যাডেটিভস থাকে। এর ফলে কোলনের দেয়াল দুর্বল হয়ে পরে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য যে কাজগুলো আপনি করতে পারেন তা হল :  

১। বেশি পরিমাণে ফাইবার গ্রহণ করা
দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় এই দুই ধরণের ফাইবার আছে। এই উভয় ধরণের ফাইবারই কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে পারে। দ্রবণীয় ফাইবার শরীরের বর্জ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ও নরম করে। অদ্রবণীয় ফাইবার মলের পরিমাণ করে। আস্ত শস্যদানা, পাস্তা,  গমের ভুষি খাওয়া অনেক কার্যকরী হতে পারে।

২। সাহায্যকারী খাদ্য
নাশপাতি, ডুমুর, ব্রোকলি, কিউই, গাজর, পীচ ফল, আনারস এবং ডুমুর ইত্যাদি ফলগুলো নিয়মিত খান। এগুলোতে ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এছাড়াও প্রচুর ফাইবার থাকে বলে অন্ত্রের জন্য ভালো। ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক চামচ ব্ল্যাকস্ট্রিপ গুড় খান। সকালে এটি আপনার কনস্টিপেশনকে সহজ করতে সাহায্য করবে। আখের গুড়কে অনেকবার জাল দিয়ে ঘন করে ব্ল্যাকস্ট্রিপ মোলাসেস তৈরি করা হয়। তাই এতে গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও মিনারেল বিশেষ করে ম্যাগনেসিয়াম থাকে বলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।  

৩। এড়িয়ে চলুন এই খাবার গুলো
চকলেট, অনেক বেশি পরিমাণে দুগ্ধজাত পণ্য, লাল মাংস, কলা ও ক্যাফেইন। ক্যাফেইন গ্রহণ করা নির্ভর করে আপনি ইতিমধ্যেই পানিশূন্যতায় ভুগছেন কিনা তার উপর। যদি পানিশূন্যতায় ভুগে থাকেন তাহলে ক্যাফেইন গ্রহণ না করাই ভালো।

৪। নিয়মিত ব্যয়াম
সক্রিয় জীবনধারা মেনে চলুন যেমন- দৌড়ানো, জগিং করা, সাঁতার কাটা বা অ্যারোবিক এক্সারসাইজ করা। এর ফলে আপনার পরিপাক নালী স্বাস্থ্যবান থাকবে ও অন্ত্রের উপর ভালো প্রভাব ফেলবে।

৫। হারবাল চা ও উষ্ণ পানীয়
পুদিনা ও আদা উভয়েই পরিপাকের সমস্যাকে দূর করতে সাহায্য করে। মেন্থল অন্ন নালীর পেশীকে শিথিল হতে সাহায্য করে। আদা তাপ প্রদানকারী গুল্ম তাই আদা শরীরের ভেতরে অধিক তাপ সৃষ্টি করে। হারবাল চিকিৎসকদের মতে আদা নিষ্ক্রিয় পরিপাককে গতি দিতে পারে। গ্রিনটি, ব্ল্যাকটি ও প্রাকৃতিক জোলাপ বা রেচক ঔষধ হিসেবে কাজ করে। ল্যাক্টোজ অসহনীয়তার জন্য কিছু মানুষ দুধ পান করতে পারেননা। তবে যদি আপনি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগে থাকেন তাহলে গরম দুধ খেলে আপনার কোষ্ঠ ঘন ঘন পরিষ্কার হবে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করার জন্য সকালে পানি বা চায়ের পরিবর্তে এক গ্লাস গরম দুধ পান করুন। এর সাথে সামান্য মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।

আরো যে কাজগুলো করতে পারেন :  
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন যেমন- প্রচুর পানি পান করুন, প্রাকৃতিক ডাকে বিলম্ব করবেননা, কোষ্ঠ পরিষ্কারের ঔষধ ব্যবহার সীমিত করুন, অ্যালকোহল সেবনের অভ্যাস থাকলে ত্যাগ করুন। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য অনেক রকমের ইয়োগা  আছে তবে সূর্য নমস্কার ইয়োগাটি অনেক কার্যকরী। তাছাড়া একটি গরম তোয়ালে  শ্রোণি অঞ্চলে দিয়ে ভাপ দিতে পারেন, স্টিম বাথ নিতে পারেন।