Thursday, February 4, 2016

অ্যাপেন্ডিসাইটিসের লক্ষণ ও প্রতিকারের ঘরোয়া উপায়

sasthobarta protidin
অ্যাপেন্ডিসাইটিসের লক্ষণ ও প্রতিকারের ঘরোয়া উপায়
অ্যাপেন্ডিক্স নামক ক্ষুদ্র উপাঙ্গের প্রদাহকে এপেন্ডিসাইটিস বলে। মানবদেহের বৃহদান্ত্রের সাথে যুক্ত আঙ্গুলের ন্যায় ক্ষুদ্র উপাঙ্গটি উদরের ডানপাশে থাকে। যখন অ্যাপেন্ডিক্সে সংক্রমণ হয়, জ্বলন হয় বা কোন কারণে অবরুদ্ধ হয়ে যায় তখন অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়েছে বলা হয়। অ্যাপেন্ডিসাইটিস তীব্র ও দীর্ঘমেয়াদী একটি রোগ যা পুরুষ ও মহিলা উভয়েরই হতে পারে।   
লক্ষণ সমূহ :
·         সাধারণত অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা হঠাৎ করেই শুরু হয়। পেটের মধ্য থেকে ব্যথা শুরু হয়ে আস্তে আস্তে ডান পাশে গিয়ে স্থায়ী হয়।
·         ক্ষুধা কমে যায়, বমি বমি ভাব হয় ও বমি হয়।
·         অ্যাপেন্ডিক্সের কাছাকাছি লসিকা গ্রন্থি ফুলে প্রদাহ সৃষ্টি করে।
·         হজমের সমস্যা হয় ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়া হয়।
·         পেটের ডান পাশের পেশি আঁটসাট হয়ে যায়।
·         নড়াচড়া করলে, গভীর ভাবে দম নিলে, হাঁচি বা কাশি দিলে ব্যথা তীব্র ও অসহনীয় হয়ে উঠে।
·         অন্যান্য উপসর্গ গুলোর সাথে নিম্ন মাত্রার জ্বর থাকতে পারে।
অপারেশনের মাধ্যমে অ্যাপেন্ডিক্স অপসারণ ও এন্টিবায়োটিক সেবন অ্যাপেন্ডিসাইটিসের চূড়ান্ত চিকিৎসা। প্রাথমিকভাবে শনাক্তকরণের পর কিছু ঘরোয়া উপায়ে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা ও ফোলা কমানো যায়। ঘরোয়া প্রতিকার গুলো হচ্ছে :

১। অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বিশ্বস্ত ঘরোয়া প্রতিকার হচ্ছে মুগ ডাল । এক মুঠো মুগ ডাল এক বাটি পানিতে ভিজিয়ে সারারাত রেখে দিন। সকালে মিশ্রণটি থেকে এক টেবিল চামচ পরিমান পান করুন। কার্যকরী ফল পেতে দিনে তিন বার গ্রহণ করুন।
২। অ্যাপেন্ডিসাইটিস নিরাময়ে রসুন অনেক কার্যকরী উপাদান। এটি অ্যাপেন্ডিক্সের ফোলা কমাতে পারে।
৩। অ্যাপেন্ডিক্সে আক্রান্ত রোগির জন্য সবজি খাওয়া ভালো। ১০০ মিলিলিটার শশা ও ১০০ মিলিলিটার বিটের রসের সাথে ৩০০ মিলিলিটার গাজরের রস মিশিয়ে দিনে দুই বার পান করলে অ্যাপেন্ডিসাইটিস নিরাময়ে অত্যন্ত উপকারি।
৪। ব্যথা কমানোর জন্য একটি ভেজা কাপড় পেটে জড়িয়ে এর উপর শুষ্ক পশমী  কাপড় শক্ত করে বেধে রাখুন।  
৫। আপনার অ্যাপেন্ডিক্স সুস্থ রাখার জন্য সারাদিনে প্রচুর পানি পান করুন।
৬। আস্ত গম খাওয়া অ্যাপেন্ডিসাইটিসের জন্য কার্যকরী ঘরোয়া প্রতিকার এবং এটি হজমের জন্য ও উপকারি।
৭। অ্যাপেন্ডিসাইটিসের রোগীদের জ্বর আসলে তুলসি পাতা পানিতে সিদ্ধ করে খাওয়ান। একমুঠো তুলসি পাতার সাথে এক টেবিল চামচ আদার পেস্ট এক কাপ পানিতে মিশিয়ে চুলায় জ্বাল দিতে থাকুন যতক্ষণ না মিশ্রণটি অর্ধেক হয়ে যায়। এটি বদহজম ও গ্যাসের ও সমস্যা দূর করতে পারে। প্রতিদিন ৩-৪টি কাঁচা তুলসি পাতা চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন তাহলে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।  
৮। পুদিনা পাতার কয়েক ফোঁটা রস পানিতে মিশিয়ে ৩-৪ ঘন্টা পর পর পান করলে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা কমে যায়।  
৯। অ্যাপেন্ডিসাইটিস নিরাময়ে লেবুর রস অনেক উপকারি। লেবুর রস ব্যথা কমাতে এবং বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। একটি লেবুর রস বের করে নিয়ে এর সাথে সমপরিমাণ কাঁচা মধু মিশিয়ে নিন। দিনে কয়েকবার মিশ্রণটি পান করুন। কয়েক সপ্তাহ নিয়মিত পান করুন।
১০। এক চামচ মেথি ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে নিয়ে মিশ্রণটি কয়েক মিনিট ফুটিয়ে নিন। তারপর মিশ্রণটি ঠান্ডা করে চায়ের মত পান করুন। এটি অ্যাপেন্ডিক্সের ভিতরে পুঁজ ও অত্যধিক মিউকাস উৎপাদনে বাঁধা প্রদান করে। তাই নিয়মিত এটি পান করুন।
১১। দীর্ঘস্থায়ী অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর ক্ষেত্রে প্রতিদিন এক লিটার ঘোল পান করলে উপকৃত হবেন। এটি অ্যাপেন্ডিক্সের ভিতরে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে।

অ্যাপেনন্ডিসাইটিস আপনার শরীরের অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে। উপরোক্ত ঘরোয়া প্রতিকারের মাধ্যমে অ্যাপেনন্ডিসাইটিসের ব্যথা ও জ্বলন কমানো যায়। যদি এগুলো কিছুদিন ব্যবহার করার পরও আপনার অ্যাপেনন্ডিসাইটিস ব্যথা থেকে মুক্ত হতে না পারেন তাহলে আপনাকে অপারেশনের মাধ্যমে অ্যাপেন্ডিক্স অপসারণ করিয়ে ফেলতে হবে। এজন্য চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে অপারেশনের প্রস্তুতি নিতে হবে। খুব বেশিদিন অ্যাপেনন্ডিসাইটিসের ব্যথা নিয়ে অপেক্ষা করা ঠিক নয় কারণ এতে অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যাবার সম্ভাবনা তৈরি হয়।                

বাসী খাবার খাচ্ছেন? জেনে নিন কী হতে পারে আপনার শরীরে

sasthobarta protidin
বাসী খাবার খাচ্ছেন? জেনে নিন কী হতে পারে আপনার শরীরে 
ব্যস্ত এই নগরজীবনে বাসী খাবার খাওয়া নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি প্রশ্ন সবার মনে সবসময় আসে, এই বাসী খাবার খাওয়া কি স্বাস্থ্যকর? কিংবা বাসী খাবার কতটুকু খেলে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে? আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক বাসী খাবার খেলে শরীরে কি হতে পারে।

১। ফুড পয়জনিং

গবেষণায় দেখা গেছে খাবারে ব্যাকটেরিয়া ৪০ ফারেনহাইট এবং ১৪০ ফারেনহাইট বেশি বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। আপনি যদি রান্না করা খাবার দুই ঘন্টার মধ্যে ফ্রিজে না রাখেন তবে ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। ফ্রিজে রাখা খাবার খাওয়ার আগে তা চুলা বা ওভনে গরম করে নিন। যতক্ষণ না খাবারের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ১৬৫ ফারেনহাইট বা ৭৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে হয় ততক্ষণ রেখে নামিয়ে ফেলুন।
২। হজমে সমস্যা

খাবারে তৈরি হওয়া ব্যাকটেরিয়া হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে। এছাড়া ব্যাকটেরিয়া খাবার পরিপাকে বাঁধা সৃষ্টি করে থাকে। যার কারণে হজমে সমস্যা হয়ে থাকে।
৩। অ্যাসিডিটি

আপনি কি প্রায়ই অ্যাসিডিটির সমস্যা ভুগে থাকেন? পেট ব্যথা বা বুক জ্বালাপোড়া করে থাকে। আপনার খাদ্যাভ্যাস এর জন্য দায়ী। যারা নিয়মিত বাসি খাবার খেয়ে থাকেন এটি তাদের খুব সাধারণ একটি সমস্যা।

৪। বমি বমি ভাব

বাসী খাবার দেখতে ফ্রেশ দেখা গেলেও এর মধ্যে ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়েছে। যার কারণে আপনার বমি বমি ভাব বদ হজম সমস্যা হয়ে থাকতে পারে।
৫। ডায়ারিয়া এবং পেট ব্যথা

বাসী খাবার খাওয়ার খুব সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হল ডায়ারিয়া। প্রতিদিন বাসী খাবার খাওয়ার ফলে আপনার পেট ব্যথা সৃষ্টি হয়। মূলত এটি পেটে সৃষ্টি হওয়া গ্যাসের কারণে পেট ব্যথা হয়ে থাকে। ফ্রিজে রাখা খাবার সাথে সাথে গরম করে খাওয়ার কারণে অনেক সময় পেট ব্যথা হয়ে থাকে। ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে কিছুক্ষণ রুমের তাপমাত্রায় রাখুন। তারপর খাবার গরম করে নিন।
৬। মাঝারি ধরণের জ্বর

অনেক সময় অতিরিক্ত বাসি খাবার খাওয়ার কারণে জ্বরেও আক্রান্ত হতে পারেন। আপনি যদি অধিকাংশ সময়ে জ্বরে ভুগে থাকেন, তবে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন।
বাসী খাবার খাওয়ার পূর্বে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কিছুক্ষণ রেখে তারপর গরম করুন। খাবার উচ্চ তাপে গরম করুন। অল্প তাপ খাবারের ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে দিয়ে থাকে।

মধুর যাদুকরী ৬ টি ব্যবহার

sasthobarta protidin
মধুর যাদুকরী ৬ টি ব্যবহার
মধু আমাদের অনেকেরই প্রিয় খাবার। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ এখন চিনির বদলে তাদের রোজকার খাবারে যোগ করছেন মধু। আমরা সাধারণত এক কাপ চায়ে বা গরম পানিতে এক চামচ মধু যোগ করে পান করি মেদ কমানোর জন্য। কিন্তু এটি ছাড়াও মধুর আছে আরো অনেক ব্যবহার। মধুর ঔষধি গুণ অনেক রোগের নিরাময় করতে সক্ষম। আসুন এমনই ১০ টি অজানা ব্যবহার জেনে নিই আজ।

ক্লিনজার হিসেবে

আপনি কি জানেন মধু একটি দারুণ ক্লিনজার? মধুর প্রাকৃতিক উপাদান ত্বকের মৃত কোষ পরিষ্কার করে, ব্যাক্টেরিয়া দূর করে। আবার ২ চামচ নারকেল তেলের সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন মানসম্পন্ন ফেসিয়াল স্ক্রাব। যা বাড়িয়ে দেবে আপনার ত্বকের সজীবতা।

এন্টিবায়োটিক

মধু শরীরে ব্যক্টেরিয়ার আক্রমণ প্রতিরোধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে ক্ষতস্থানে মধু লাগালে তা এন্টিবায়োটিকের মতই ক্ষত সারায়। বাজারে মধু কেনার সময় এর রঙ এর দিকে খেয়াল করুন। মধু যত গাঢ় হবে তত তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকবে।

অনিদ্রা কাটাতে

যাদের অনিদ্রা সমস্যা রয়েছে তারা ঘুমাতে যাওয়ার আগে মধু খাওয়ার অভ্যাস করে দেখুন। গরম পানিতে মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন। অথবা মধু উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে এমন খাবারও খেতে পারেন। যেমন, ফালুদায় মধু ব্যবহার করলেন অথবা আইসক্রিমের উপর ১ লেয়ার মধু দিয়ে নিলেন। মধু থেকে নিঃসৃত চিনি মস্তিষ্ককে প্রশান্ত করে আপনার অনিদ্রা দূর করে দেবে।

অবাঞ্চিত দাগ দূর করতে

শরীরের অবাঞ্চিত দাগ দূর করতে মধু খুবই কার্যকরি। আমাদের শরীরে বিভিন্ন কাটা দাগ, পোড়া দাগ, মোটা শরীরের ফাটা দাগ থাকে। এই দাগ দূর করতে মধুর চেয়ে ভাল সমাধান আর নেই। ১ চামচ নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সাথে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে দাগের উপর নিয়মিত প্রলেপ দিন। ১ সপ্তাহেই ফলাফল দেখতে পাবেন।

মুখের দূর্গন্ধ দূর করতে

মধুর ব্যবহার আপনাকে দিতে পারে মুখের বিব্রতকর দূর্গন্ধ থেকে মুক্তি। বিভিন্ন কেমিক্যাল যুক্ত মাউথ ফ্রেশনার ব্যবহার করেও হয়ত উপকার পাচ্ছেন না, কিন্তু টাকা নষ্ট হচ্ছে, একই সাথে মুখের মাড়ির, দাঁতের ক্ষতিও হচ্ছে। এর পরিবর্তে ১/৮ চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো আর মধু গরম পানিতে মিশিয়ে নিয়মিত গার্গল করলে আপনি অচিরেই উপকার পাবেন।

ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে

শীতে আমাদের ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। ফেটে যায় কনুই, পায়ের গোড়ালি। এই সমস্যা দূর করতে প্রতি বছর আমরা দামী দামী লোশন, ময়েশ্চারাইজার কিনে অনেক টাকা ব্যয় করি। প্রাকৃতিক উপায়ে এর সমাধান করে মধু। গোসলের পর শুষ্ক ত্বকে মধু মেখে রাখুন। ১৫/২০ মিনিট পর গরম পানিতে টাওয়াল ভিজিয়ে মুছে ফেলুন। কয়েকদিন নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বক আবার উজ্জ্বলতা ফিরে পাবে।
খাঁটি মধু পাওয়া খুব কঠিন। বাজারে যেসব মধু পাওয়া যায় তাতে প্রচুর পরিমাণে চিনি মিশ্রিত থাকে। সতর্কতার সাথে মধু কিনুন, ব্যবহার করে উপকৃত হোন।

Wednesday, February 3, 2016

পিঠে ব্যথার ঘরোয়া সমাধান

sasthobarta protidin
পিঠে ব্যথার ঘরোয়া সমাধান
সারাদিন বসে কাজ করার ফলে পিঠে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এতে ক্লান্তি অনুভূত হওয়ার পাশাপাশি পিঠে ব্যথাও হতে পারে। যত্ন নেওয়া না হলে এই ব্যথা গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে পিঠব্যথা উপশমের ঘরোয়া কিছু টোটকা উল্লেখ করা হয়।

- নারিকেল তেলের সঙ্গে কর্পূর গুঁড়া মিশিয়ে পাঁচ মিনিট চুলায় জ্বাল দিতে হবে। তেল ঠাণ্ডা করে একটি বোতলে সংরক্ষণ করতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে ওই তেল পিঠে মালিশ করে নিতে হবে।               

- এক বালতিকুসুম গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস ওয়েল বা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে গোসল করতে হবে। এতে কোমর ব্যথার পাশাপাশি শরীরের যেকোনো ব্যথা কমে আসবে। তাছাড়া শরীরের ক্লান্তি দূর করতেও সাহায্য করবে এই পানি। চাইলে বাথটাবে যেকোনো এসেনশিয়াল অয়েল মিশ্রিত কুসুম গরম পানি নিয়ে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলে শরীরের ক্লান্তি দূর হবে।

- টিভি দেখা বা গল্প বই পড়ার সময় পানি ভর্তি একটি হট ওয়াটার ব্যাগ পিঠের পিছনে কুশনের মতো দিয়ে রাখত হবে। পানির গরম ভাপ ব্যথা উপশমে সাহায্য করবে।

- গোসলে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে সরিষা তেল দিয়ে পিঠ মালিশ করুন। এর পর কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে হবে।

- এক গ্লাস হালকা গরম দুধে এক চিমটি হলুদ এবং খানিকটা মধু মিশিয়ে পান করতে হবে। পিঠ ব্যথা থেকে রেহাই পেতে নিয়মিত এই দুধ পান করতে হবে। তাছাড়া মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা এবং ঠাণ্ডার সমস্যা উপশমেও সাহায্য করে হলুদ দুধ।

- চা বানানোর সময় গরম পানিতে কয়েক টুকরা আদা দিন। আদা চা পিঠ ব্যথার তীব্রতা কমাতে সাহায্য করবে।

- যে কোনো ভেষজ তেল শরীর মালিশের জন্য বেশ উপকারী। পিঠব্যথা উপশমেও ভেষজ তেলের মালিশ সাহায্য করবে।

- একটি মোজা নিয়ে তার ভিতরে চাল ভর্তি করতে হবে। এরপর মোজার খোলা প্রান্তটি শক্ত করে বেঁধে  মাইক্রোওয়েভে তিন থেকে পাঁচ মিনিট গরম করে মোজাটির উপর শুয়ে থাকতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় পিঠ ব্যথায় আরাম পাওয়া যায়।

খেলার ছলে শিশুর মেধা বিকাশ

sasthobarta protidin
খেলার ছলে শিশুর মেধা বিকাশ
মেধা বিকাশে দরকার বুদ্ধির সঠিক চর্চা। শিশুকে ছোটবেলা থেকেই বুদ্ধিমত্তায় সেরা করে তুলতে চেষ্টা করতে হবে। জ্ঞান বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়াটাও তাই সবচেয়ে জরুরি। সব শিশু আবার বই খাতা নিয়ে পড়ার প্রতি আগ্রহী হয় না। তাদের আগ্রহ থাকে নানা রকম খেলার প্রতি। সেই খেলাও হতে পারে শিশুর মেধা বিকাশের রাস্তা। এমনই কিছু খেলা যেমন- দাবা ও সুডোকু বুদ্ধিমানের খেলা হিসেবে বিবেচিত। আমেরিকান একদল বিজ্ঞানী দাবা এবং সুডোকু খেলাকে ব্রেন গেম বলে আখ্যায়িত করেছেন। এসব খেলার ছলে শিশুর মেধাবিকাশে কিভাবে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে তা জেনে নেয়া যাক।

পড়ার দক্ষতা বৃদ্ধি

মস্তিষ্ক পেশীর মতো কাজ করে। তাই মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য দরকার প্রয়োজনীয় ব্যায়াম। দাবা বা সুডোকু খেলার মাধ্যমে মস্তিষ্কের ভালো ব্যায়াম হওয়া সম্ভব। এসব খেলায় অতিরিক্ত মনোযোগী হওয়ার অভ্যাস শিশুর পড়ার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়।

দূরদর্শিতা বাড়ে

এই খেলার মাধ্যমে শিশুরা পরিকল্পনা আর দূরদর্শিতার শিক্ষা পেয়ে থাকে। ভেনিজুয়েলার আট হাজার শিক্ষার্থীর উপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে দাবা খেলে এমন ছেলে মেয়েরা চার মাসের মধ্যে আই কিউ স্কোর উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ে।

সজাগ দৃষ্টি

অপর পক্ষকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে দাবা খেলায় প্রতিপক্ষের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা জরুরি। খেলায় নিজেকে জেতাতে একাগ্রতার সঙ্গে কাজ করতে হয়। দাবা খেলা দৃষ্টি সজাগ রাখার সঙ্গে কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।

সৃজনশীলতা বাড়ে

মস্তিষ্কের ডান দিক আচরণে সৃজনশীলতা বাড়াতে কাজ করে। মস্তিষ্কের এই অংশের কার্যক্ষমতা বাড়াতে দাবা খেলা খুবাই উপকারী। এসব খেলা চিন্তা ভাবনায় মৌলিকত্ব আনে, মেজাজ স্বাভাবিক রাখে, অঙ্গীকার পূরণে মানসিকতা গড়ে তোলে।

স্মৃতিশক্তি বাড়ে

অপর পক্ষের ত্রুটি বিচ্যুতি মনে রেখে এগিয়ে চলা এবং সুডোকু খেলায় সুক্ষ্ম চাল মনে রেখে এগিয়ে চলার অভ্যাস স্মৃতিশক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। আর তাই লেখাপড়া বা অন্য যেকোনো জিনিস সহজে ভুলে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

সমাধানের ক্ষমতা

শিশুকে যেকোনো সমস্যা সমাধানের চটপটে করে তোলে। কোনো প্রয়োজনে উপস্থিত বুদ্ধির জোরে যেমন খেলাগুলো জয় লাভ করে, তেমনি পড়াশুনা, আচার ব্যবহারেও কোনো সমস্যায় পড়লে তার সমাধান বের করতে শিশু বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়।

বিচার বুদ্ধি

সঠিক নির্বাচন ক্ষমতা বাড়ে। কি গ্রহণ করবে কি করবে না- এমন পশ্নের মুখোমুখি হলে সুকোডু বা দাবা খেলা শিশুরা সহজভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। মেজাজ ঠাণ্ডা রেখে সিদ্ধান্ত নেয়াটা তাদের কাছে কোনো ব্যপার না।

শিশুর হাতে মুক্তঝরা লেখা

sasthobarta protidin
শিশুর হাতে মুক্তঝরা লেখা
সোনামণিটা মুখে মুখে শিখে গেছে অনেক পড়া। এবার লেখার পালা। খাতা কলম হাতে নিয়ে বসে যা লিখছে, তা দেখে আপনি রীতিমতো হতবাক। অক্ষর গুলো একেকটা একেক রকম। হাতের লেখার কারণে ক্লাস পরীক্ষাতেও খারাপ ফল হচ্ছে। দুয়েকটা ক্লাস পার হয়ে গেলেও কোনো ভাবেই তার হাতের লেখা সুন্দর হচ্ছে না। শুধু শিশু নয় উপরের ক্লাসের অনেকেরই হাতের লেখা খুবই অসুন্দর হয়। হাতের লেখা অসুন্দর হওয়াটায় এখন আপনার চিন্তার বিষয়। এমন চিন্তা দূর করতে প্রয়োগ করতে পারেন কিছু উপকারী কৌশল। আসুন দেখে নেয়া যাক কীভাবে আপনার শিশুর হাতেও মুক্তঝরা লেখা হতে পারে।

- সোনামণির খাতায় প্রথমত এক লাইন সুন্দর করে অক্ষর লিখে দিতে হবে। ওটা দেখে লাইন ধরে লেখার অভ্যাস করবে।

- প্রত্যেকটি অক্ষরের স্টাইল কেমন হবে তা আপনিই ঠিক করে দিন। শিশু সেটা দেখেই রপ্ত করবে। বড়রাও পছন্দের কোনো লেখা দেখে প্রতিটি অক্ষরের স্টাইল ঠিক করে নিতে পারেন। এতে লেখা সুন্দর হবে।

- এক প্যারা থেকে আরেক প্যারার মাঝে এক ইঞ্চি ফাঁকা রাখার অভ্যাস করাতে হবে। এতে লেখা ভালো দেখায়।

- বায়ে এবং ওপরে সোয়া এক ইঞ্চি ফাঁকা রাখলে হাতের লেখা সুন্দর দেখায়।

- বাচ্চাদের খাতার পুরো লাইন ভরে লেখানো উচিৎ।

- প্রতিটি বর্ণ যেন সমান হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

- বাচ্চাদের লেখার সময় কলম বা পেন্সিল ধরাটা ঠিকভাবে শেখাতে হবে। পেন্সিলের শিষ থেকে এক ইঞ্চি দূরত্বে ধরলে লেখা ভালো হবে।

- সঠিক উচ্চতার চেয়ার-টেবিলে বসে লিখলে লেখা সুন্দর হয়।

- প্রাথমিক পর্যায়ে বর্ণগুলো সোজা করে লিখতে হবে।

- তিনকোনা বর্ণগুলো সবচেয়ে সোজা। আগে সে অক্ষরগুলো থেকে লেখা অনুশীলন শুরু করতে পারে। যেমন-ব,ক।

- খাতায় বর্ণে আকারে ফোঁটা দিয়ে দিন। শিশুকে তার উপর হাত ঘুরিয়ে বর্ণ লেখা অনুসরণ করান। তাহলে তার জন্য বেশি সহজ হবে।

- সবার আগে প্রয়োজন শিশুকে অক্ষর চেনানো। অক্ষর না চিনলে সে লিখতে পারবে না। সঙ্গে সঙ্গে কোন অক্ষরে মাত্রা নেই, কোনটাতে অর্ধমাত্রা সেটিও মুখস্থ করিয়ে দিন।

- কোন বর্ণে মাত্রা আছে, কোনটায় অর্ধমাত্রা ইত্যাদি ভালোমতো জেনে সে অনুযায়ী অনুশীলন করাতে হবে। লেখা আপনিতেই সুন্দর হবে।

- সাদা খাতায় শিশুকে উপর থেকে নিচে লাইন টানতে দিন। এতে শিশুর খাতার দিকে মনোযোগ দেয়ার অভ্যাস তৈরি হবে। এ ছাড়া সুন্দর একটি অক্ষর লিখে তার ওপর শিশুকে হাত ধরে ঘুরিয়ে লেখালেও অক্ষরের আকার সম্পর্কে ধারণা সুস্পষ্ট হয়।

Tuesday, February 2, 2016

ফুড পয়জনিং এর কারণ ও প্রতিকার

sasthobarta protidin
ফুড পয়জনিং এর কারণ ও প্রতিকার
খাবার থেকে যে অসুস্থতার সৃষ্টি হয় তাকে ফুড পয়জনিং বা খাদ্য বিষক্রিয়া বলে। দূষিত, নষ্ট ও বিষাক্ত খাবার খাওয়ার ফলে ফুড পয়জনিং হয়ে থাকে। ফুড পয়জনিং এর সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলো হচ্ছে, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া ও ডায়রিয়া হওয়া। ফুড পয়জনিং অস্বস্তিকর হলেও অস্বাভাবিক কিছু না। বেশিরভাগ ফুড পয়জনিং এর জন্য দায়ী কারণ হল- ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও  পরজীবীর সংক্রমণ। মানুষ যে খাবার খায় তার বেশিরভাগের মধ্যেই প্যাথোজেন বা জীবাণু থাকে। রান্না করার সময় যে তাপ লাগে তাতেই জীবাণুগুলো মরে যায়। কাঁচা ফলমূল ও সবজি ফুড পয়জনিং এর জন্য দায়ী। যেকোন বয়সের মানুষেরই ফুড পয়জনিং হতে পারে তবে শিশুদের বেশি হয়ে থাকে।  

খাদ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও রান্নার সমস্যার কারণে খাদ্য সংক্রমিত হয়।মাংস ও দুগ্ধ জাতীয় খাবার ফ্রিজে রাখার সময় ফ্রিজের তাপমাত্রা ঠিক আছে কিনা দেখে নেয়া ভালো। সঠিক তাপে সংরক্ষণ না করলে সংক্রমিত হতে পারে।

মাংস রান্নার সময় দীর্ঘক্ষণ উচ্চ আঁচে রান্না করতে হবে। তাহলে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে। অর্ধ সিদ্ধ মাংসে জীবাণু থেকে যেতে পারে।রান্নার সরঞ্জাম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না রাখলে খাদ্য সংক্রমিত হয়।হাত না ধুয়ে খাবার জিনিস ধরলে সংক্রমণ হয়।পানি খুব দ্রুত সংক্রমিত হতে পারে। তাই খাওয়ার পানির সংরক্ষণের বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন।

প্রতিকার

ফুড পয়জনিং সাধারণত নিজে নিজেই ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ভালো হয়ে যায়। এই  সমস্যাটির প্রতিকারের জন্য যা যা করা প্রয়োজন –
১। শরীরের পানিশূন্যতা রোধের জন্য প্রচুর তরল খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। ডাবের পানি বা ফলের রস খেতে পারেন।
২। ক্যাফেইন গ্রহণ করলে পরিপাক নালীর যন্ত্রণা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় পান করা এড়িয়ে যেতে হবে।
৩। ফুড পয়জনিং এ আক্রান্তদের বিশ্রামের প্রয়োজন।
৪। ডায়রিয়া ভালো হওয়ার আগ পর্যন্ত কঠিন খাবার ও দুগ্ধ জাতীয় খাবার গ্রহণ বন্ধ রাখতে হবে।
৫। স্বাভাবিক খাবার খেতে পারেন তবে অল্প পরিমাণে। চর্বিযুক্ত ও মশলা যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
ফুড পয়জনিং এর ইনফেকশন যাতে না ছড়ায় সেজন্য – টয়লেট থেকে ফিরে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন। আপনার ব্যবহৃত জিনিস যেমন- তোয়ালে, অন্যকে দেবেন না। অন্যদের জন্য খাবার তৈরি বা পরিবেশন করা থেকে বিরত থাকুন। যদি আপনার ফুড পয়জনিং এর কারণ ক্রিপ্টোস্পোরিডিয়াম হয় তাহলে দুই সপ্তাহ সুইমিং পুলে সাঁতার কাটা বন্ধ রাখুন। যদি দুই এক দিনের মধ্যে ফুড পয়জনিং এর সমস্যাটি ভাল না হয় তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।